
মোংলা-খুলনা মহাসড়ক এখন মৃত্যুফাঁদ
- আপলোড সময় : ০১-০৯-২০২৫ ০৪:৫৮:৪৩ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ০১-০৯-২০২৫ ০৪:৫৮:৪৩ অপরাহ্ন


দেশের গুরুত্বপূর্ণ এন-৭ জাতীয় মহাসড়ক মোংলা-খুলনা সড়কটি এখন মৃত্যু ফাঁদে পরিণত হয়েছে। মোংলা বন্দর, ইপিজেড, রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প, সুন্দরবনসহ দক্ষিণাঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্য ও পর্যটনের একমাত্র ভরসা এই মহাসড়কটি দীর্ঘদিন সংস্কারহীন অবস্থায় পড়ে থাকায় রাস্তাটি আজ বিপজ্জনক ও ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। প্রায় ৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই মহাসড়কের ৪১ কিলোমিটার অংশ পড়েছে বাগেরহাট সড়ক বিভাগের অধীনে। এর মধ্যে কাটাখালী মোড় থেকে তেঁতুলিয়া সেতু এবং দ্বিগরাজ রেলক্রসিং থেকে মোংলা ফেরিঘাট পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটার রাস্তার অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। কোথাও কোথাও গর্তের গভীরতা দেড় ফুট ছাড়িয়েছে। খানাখন্দ ছাড়াও মহাসড়কের অনেক জায়গা উঁচু-নিচু হয়ে গেছে। বর্ষা হলে এসব গর্তে পানি জমে গিয়ে পরিস্থিতি আরও নাজুক হয়ে ওঠে। প্রতিদিন এ মহাসড়কে শত শত আমদানি-রপ্তানিমুখী ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, লরি আটকে পড়ছে। মোংলা বন্দর এলাকার প্রায় ৫ কিলোমিটারজুড়ে রাস্তা হয়ে উঠেছে চলাচলের অযোগ্য। জমে থাকা কাদা-পানিতে পথচারীরাও হাঁটতে পারছেন না। সরেজমিনে দেখা গেছে, মোংলা ফেরিঘাট থেকে রামপাল পাওয়ার প্ল্যান্ট পর্যন্ত মহাসড়কে যান চলাচল কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন চলাচল করছেন চালক ও যাত্রীরা। মোংলা বন্দর ব্যবহারকারী ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন, মহাসড়কটির এ অবস্থা মোংলা বন্দরের কার্যক্রমকেই স্থবির করে তুলেছে। পণ্য পরিবহনে ভয়াবহ সমস্যা দেখা দিয়েছে। ট্রাকচালক করিব হোসেন বলেন, প্রতিদিন শত শত পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল করে এই সড়কে। প্রায়ই গাড়ি গর্তে আটকে পড়ে, ট্রাকের চাকা ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়। ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যাওয়ার জোগাড়। রেজাউল করিম রনি, যিনি বসুন্ধরা সিমেন্ট ফ্যাক্টরিতে কর্মরত, জানান, এই রাস্তায় হাঁটাও যায় না। কাদাপানিতে শরীর ভিজে যায়, গোসল না করে কোথাও বসা যায় না। ইজিবাইক বা ভ্যানেও কায়দা করে চলতে হয়। বাগেরহাট সড়ক বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী ফয়সাল আহমেদ বলেন, সড়কের দুই পাশে মাছের ঘের থাকায় বর্ষায় পানির চাপে মাটি ও বালু ধসে যায়। এতে রাস্তা দুর্বল হয়ে পড়ে। আপাতত গর্তগুলো ইট ও খোয়া দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে। বৃষ্টি কমলে বিটুমিন দিয়ে মেরামতের কাজ শুরু হবে। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রকৌশল ও উন্নয়ন) এ কে এম আনিসুর রহমান ইসলাম জানান, ফেরিঘাট থেকে দিগরাজ পর্যন্ত সড়ক বন্দরের আওতাধীন। অতিবৃষ্টির কারণে রাস্তার অবস্থা খারাপ হয়েছে। ইতোমধ্যে সংস্কার কাজের ওয়ার্ক অর্ডার হয়েছে। দ্রুত কাজ শুরু হবে। বাগেরহাট সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, মোংলা-খুলনা মহাসড়কের ৪১ কিলোমিটারে কিছু জায়গায় সমস্যা দেখা দিয়েছে। গর্তগুলো ভরাট করে চলাচলের উপযোগী রাখা হচ্ছে। প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে চার লেনে উন্নীত করার প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। অনুমোদন পেলে স্থায়ী সমাধান সম্ভব হবে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ